পূজোর কেনাকাটা নিয়ে প্রায় তিন মাস আগে থেকেই একটা উত্তেজনা শুরু হয়। সেই কবে থেকে পুচু নিজের উপার্জনে সকলের জন্য প্রতি পূজোতে জামাকাপড় কেনে। অবশ্যই সে নিজের জন্যও কেনাকাটা করে। বাংলা সিনেমার সেই মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছোট্ট মেয়েটির মতো নয়, যে নিজের জন্য কিছু কিনতে পারেনি—পুচু নিজের জন্যও সুন্দরভাবে খরচ করে, কারণ তার উপার্জন যথেষ্ট।
এবার পূজো তার জন্য আরও বিশেষ। বাবাইয়ের জন্য এই প্রথমবার পূজোয় কেনাকাটা করবে পুচু। এমনিতেই সুযোগ পেলেই বাবাইকে ছোটখাটো উপহার দেয় সে, আর বাবাই ভোঁদড়ের মতো মুখে একগাল হাসি নিয়ে বলে, “কি দরকার ছিল এতগুলো টাকা নষ্ট করার?” পুচু অভিমানের সুরে উত্তর দেয়, “যাহ! নিতে হবে না তোকে।” বাবাই মৃদু হেসে বলে, “দূর পাগলি, আমি কি নেবো না বলেছি?” পুচু মনের মধ্যে হাসি চাপতে চাপতে ভাবে, “তোকে আমি আমার মতো সাজাবো—হালকা রঙের শার্ট, ফর্মাল প্যান্ট, পায়ে কালো চামড়ার জুতো, আর হাতে একটা বড়ো ডায়ালের ঘড়ি—আর কিছু চাই না।”
একদিন বৃষ্টির সন্ধ্যায় সবাইকে পূজোর জন্য কেনাকাটা করতে গিয়ে পুচুর নিজের জন্য একটা জামা পছন্দ হয়। ট্রায়াল রুমে গিয়ে সেই জামা পরে বাবাইকে একটা ছবি পাঠায়, সঙ্গে লেখা, “নেবো এটা?” বাবাই উত্তরে বলে, “নাও, ভালো লাগছে। এটা সাদা চুড়িদার বা হালকা রঙের জিন্সের সঙ্গে মানাবে।” পুচু উত্তরে বলে, “হ্যাঁ, জানি। সবার জন্য কিনলাম, শুধু তুমি বাকি।”
বাবাই কিছু বলতে পারে না, চোখের কোনে জল চলে আসে। সে লিখে পাঠায়, “তুমিও বাকি, আমার কাছে।” বাবাই যতবারই কিছু কিনে দিতে চেয়েছে, পুচু কখনোই নিতে চায় না। এরকম করেই দিনগুলো কেটে যায় তাদের।
পাঠক, মানুষের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কি জানেন? যখন কেউ আপনার পছন্দ-অপছন্দকে নিজের জীবনে অগ্রাধিকার দেয়, তখনই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষের অনুভূতি হয়। মানুষ চিরকাল ভালোবাসা, গুরুত্ব আর মায়ার মধ্যেই গলে যায়। এটাই মানব স্বভাব, আর এটাই সম্পর্কের মূল বন্ধন।

আমার অনেক দিনের ইচ্ছে একটি প্রেমের গল্পের সিরিজ লেখার। সময় ও সুযোগের অভাবে হয়ে ওঠেনি। আজ এই মধ্যবয়সে এসে সেই পুরোনো ইচ্ছে পূরণ করা শুরু করলাম। গল্পের সব চরিত্র কাল্পনিক। বাস্তবের সাথে কোনো মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুমাত্র কাকতালীয়।
আগেও কয়েকটা ছোট গল্প লিখেছিলাম এই দুই চরিত্র নিয়ে। সেগুলো কোথায় হারিয়ে ফেলেছি জানি না। এবার ধারাবাহিক ভাবে চলবে।
কলমে: হিউম্যানিয়া সঞ্জয় (জয়)



রূপ কথা
বিজয়া দশমীর রাতের গল্প
কালচক্র
শামুকের মুক্তি
অভিমানী বাবী
বৃষ্টির দিনে সেই প্রথম
ফেসবুকের অভিনন্দন পত্র
Gaighata Tornado 1983 | গাইঘাটা ঘূর্ণিঝড় ১৯৮৩ (চড়ুইগাছি টর্নেডো)