Share

Mission Mangal Review

আমার চোখে ‘মিশন মঙ্গল’

মিশন মঙ্গল, বহু প্রতীক্ষি এই সিনেমাটি রিলিজ করেছে ১৫ ই আগস্ট। ২০১৩ তে ভারতের মঙ্গল যান প্রেরনের পটভূমিকায় তৈরি এই সিনেমা। ইসরো (ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টার) পৃথীর প্রথম সংস্থা যারা প্রথম প্রচেষ্টাতেই  মঙ্গল যান প্রেরণে সফল হয়,  তাও মাত্র ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করে, যা কিনা NASA র  খরচের মাত্র ৮%। এই অভূতপূর্ব ঘটনাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে মিশন মঙ্গলের কাহিনী।

‘ফ্যাট বয়’ মিসাইল লঞ্চের ব্যর্থতা দিয়ে গল্প শুরু। ব্যার্থতার সবদায় স্বীকার করে নেয় মিশন ডাইরেক্টর রাকেশ ধাওয়ান(অক্ষয় কুমার), আর সেই রেসেই তাকে ছুড়ে ফেলা হয় মার্স মিশনে যেটা সেই সময় ইসরোর কাছে ছিলো অসম্ভব। কিন্তু প্রজেক্ট ডিরেক্টর তারা সিন্ধের (বিদ্যা বালন) মাথায় আসে এক অচিনব চিন্তা।  মধ্যবিত্ত মহিলা দের ঘর চালানোর ফর্মুলা কে হাতিয়ার করে তৈরী হতে শুরু করে মঙ্গল যান।

স্পেস সাইন্স  ও হোম সাইন্স মিলেমিশে গড়ে ওঠে এক নতুন সম্ভবনা। এরই মাঝে বাঁধ সাধার চেষ্টা করে চন্দ্র যান ২ এর মিশণ ডিরেক্টর রুপার্ট  দেশাই (দলীপ তাহিল)।  প্রয়োজন মতো কোনো সিনিয়র বৈজ্ঞানিক দেওয়া হয়না মঙ্গল যান টিমে। নতুন দের নিয়েই তৈরী হয় মঙ্গল যান, আর তারপর বাকিটা ইতিহাস। এই ইতিহাসের সাক্ষী হতেই চলে যেতে হবে সিনেমা হলে।

গল্পে সিনেমেটিক থ্রিল আনার জন্য বেশ কয়েকবার বাস্তবতা থেকে সরে আসা হয়েছে, মদ্যপ অবস্থায় মেট্রোতে মারা মারি তার একটা উদাহরণ। তবে ফেমিনিজম কে খুব করে প্রমোট করা হয়েছে এই ছবিতে। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মেয়েরা এগিয়ে চলেছে সেটা খুবই সুন্দর করে দেখানোর চেষ্টা হয়েছে মিশন মঙ্গলে।

শুধুমাত্র সফল মঙ্গল যান উৎক্ষেপণ নয়,  আজকের সমাজের নারী দের সংসার ও কেরিয়ার দুটো সামলানোর দক্ষতার একটি ডকুমেন্টেশন ও বটে। ক্লাইম্যাক্স লম্বা নয়,  তবুও আর অন্নান্য পেট্রিয়টিক সিনেমার  মতোই ভারতীয় হিসাবে গর্বে আপনার বুক ফুলিয়ে দেবেই।

অক্ষয় কুমার ও বিদ্যা বালানের ভূমিকা সবথেকে বেশী আর দুজনেই খুব ভালোভাবে সেটা পালন করেছেন। সোনাক্ষী  সিনহা, তাপসী  পান্নু, নিত্যা মেনেন, কীর্তি  কুলহারি প্রত্যেকেই নিজের নিজের চরিত্রে মানানসই ও মার্জিত অভিনয় করেছেন। শারমান  জোশি অনেক দিন পরে সিনেমার পর্দায় ফিরলেন ও নিজের চরিত্রে  খুব ভালো অভিনয় করেছেন।  এইচ. জি. দত্তাত্রেয়, সঞ্জয়  কাপুর, দলীপ  তাহিল, বিক্রম  গোখলে, মোহাম্মদ  জীশান  আইয়ুব, পুরাব  কোহলি  এরা প্রত্যেকেই নিজের নিজের চরিত্রতে অসাধারণ।

প্রথম চেষ্টায় জাগন শক্তি এতো বড়ো মাল্টি ষ্টার কাস্ট ও ইন্ডিয়ান ইমোশনের সাথে জড়িত সাবজেক্টে সিনেমা বানিয়ে সবার মন কেড়ে নিয়েছেন। কিছু কিছু জিনিস হিন্দি সিনেমার স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে,  যেমন ইসরো তে বৈজ্ঞানিকরা নেচে নেচে ঘর পরিষ্কার করছে,  মদ্যপ অবস্থায় মেট্রোতে মারামারি করছে। এগুলো কে উপেক্ষা করলে এক কথায় স্মার্ট ফিল্ম মেকিং বলা যায়।

একজন ভারতীয় হিসাবে এই সিনেমাটা একবার অন্তত দেখা উচিৎ। আমাদের বিজ্ঞানীদের এচিভমেন্ট আমাদের নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আমি মনেকরি। প্রত্যেক দর্শক ভারতের জন্য গর্ব নিয়েই সিনেমা হল থেকে বার হবেন বলে আমার বিশ্বাস।

সব শেষে অনুরোধ করবো নীচে দেওয়া লিংকের audio book টি শোনার। এটি আমাদের সকলের প্রিয় বৈজ্ঞানিক এ.পি.যে. আব্দুল কালাম স্যার এর লেখা বই ‘Wings of fire’।