Share

বাচ্চারা হলো ফেরেস্তার (দেবদূতের) মতো!

শুনেছি তুরস্কের বেশিরভাগ মসজিদের দেওয়ালে একটা কথা লেখা আছে, কথাটি বাংলা অনুবাদ করলে হল –

“মুহতারাম, নামাজ পড়ার সময় যদি পেছনের সারি থেকে বাচ্চাদের হাসির আওয়াজ না আসে তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের ব্যাপারে ভয় করুন!”


কোনো একজন অপরিচিতি মানুষের এক অভিজ্ঞতার কথা পড়েছিলাম ফেসবুকের। লেখাটা যেমন ছিল তেমন এখানে তুলে ধরলাম।

“এইবার একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি। ওমানের প্রায় বেশ কয়েকটা মসজিদে নামাজ আদায় করার সুযোগ হয়েছে আমার, তো প্রায় সবখানে দেখতাম বাচ্চারা মসজিদে মোটামুটি উপস্থিত থাকে। তাদের যেখানে ইচ্ছা খেয়াল খুশী মতো কাতারে (সারিতে) দাড়ায়। বড়রা কিছু বলেনা, এমনকি অনেক সময় দেখতাম নামাজের সময় বাচ্চারা পেছনে বা সামনে কোন কাতারে (সারিতে) হইহুল্লোড় করছে। নামাজ চলছে, শেষে ইমাম বা মুসল্লি কেউ কিছু বলেনা। আমি একদিন একজনকে জিজ্ঞেস করলাম এর কারন কি!

তিনি উত্তরে বললেন বাচ্চারা হলো ফেরেস্তার (দেবদূতের) মতো এরা এখানে আসবে একটু দুষ্টামি করবে কিন্তু দেখতে দেখতে এটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে। দুষ্টামির ব্যপারটা বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঠিক হয়ে যাবে, সেটা কোন ব্যাপার না। কিন্তু এখন যদি ওকে মসজিদে বকা দেওয়া হয়, মারা হয় তাহলে সে তো আর এইখানে আসতেই চাইবেনা, একটা ভয় নিয়ে বেড়ে উঠবে, এটা তো ঠিক না”।

কি সুন্দর যুক্তি, আর ঠিক উল্টো চিত্র আমি দেখেছি আমাদের দেশে। আমি এমনও দেখেছি নাতী কে মসজিদে নিয়ে আসার কারনে নানার (দাদুর) সাথে আরেক জনের মারামারি লেগে গিয়েছিলো। ছোট বাচ্চাকে নামাজে এনে বিপাকে পড়ে অনেক মানুষ। ঈদের সময় বহুবার আমি নিজে দেখেছি। আমি যখন ছোট ছিলাম, আমাকেও এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। আমাদের এলাকার কিছু মুরব্বিরা তো মসজিদে গেলে বড় বড় মোল্লা হয়ে যায়, সামনের কাতারে (সারিতে) ছোটদের দাড়াতেই দেয় না, বাচ্চারা আওয়াজ করলে চড় থাপ্পর এসব তো আছেই।

এই ব্যাপারে যুব গোষ্ঠী কে সতর্ক হওয়া দরকার। বয়স্কদের কে এইসব বোঝানো দরকার। আমাদের ইমামদের উচিৎ এইসব ব্যাপারগুলো সবাইকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে বলা। তাহলে বাচ্চারা মসজিদ মুখি হতে আগ্রহী হবে। আমার মত বছরে মাত্র দুই বার মসজিদের না গিয়ে প্রত্যেক দিন পাঁচ বার মসজিদে যাবে খুশি খুশি।

সঞ্জয় হুমানিয়া
৩০ অগাস্ট ২০১৮, বেঙ্গালুরু, ইন্ডিয়া
ক্রেডিট – Mohammed Ariful Islam