Share

আধুনিক সুরক্ষা কবজ

[mks_dropcap style=”letter” size=”52″ bg_color=”#ffffff” txt_color=”#000000″]আরব্য[/mks_dropcap]রজনী উপন্যাসে এই সুরক্ষা কবজের উল্লেখ আছে বহু গল্পে। রণে বনে জলে জঙ্গলে যেখানেই বিপদ আসে, এই সুরক্ষা কবজ রক্ষা করে। ভূত প্রেত জিন দুষ্টলোক ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে এই মহা শক্তিশালী এই কবজ। আজকাল এই কবজ খুবই প্রচলিত। কেউ কেউ গলায় ঝোলায়, কেউ আবার সুন্দর করে কোমরে ঝোলায়। যখনই ঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে আপিসের দিকে পা বাড়ায়, তখন এই কবজ গলায় বা কোমরে শোভা পায়। কাজ শেষে আপিস থেকে বেরিয়ে ঘরের চৌকাঠে পা না পড়া পর্যন্ত কবজ শরীরের যথা স্থানে শোভা পায়। বর্তমানে এই কবজের প্রধান কাজ হলো কাঁচের দরজা খোলার সময়ই ব্যবহার করা। প্রত্যেক IT কোম্পানীর প্রত্যেক কর্মীচারীর কাছে এই কবজ পাবেন। এই কবজের আধুনিক ও পোশাকি নাম ID কার্ড। যত নামীদামী কোম্পানি, ততই বেশিক্ষন এই কবজ পরে থাকতে ভালোবাসি আমরা। ধরুন Widro বা Linfosys এর কর্মীচারীরা এই কবজ ২৪ ঘন্টা পরে থাকেন। ঘুমাবার সময় স্বপ্নের মধ্যেও এনারা সবাইকে বুঝিয়ে দেন যে ওনাদের কাছে MNC এর কবজ আছে। একটু মাঝারি IT কোম্পানীর কর্মীচারীরা ঘর থেকে কবজ পকেটে করে নিয়ে যায়, এবং আপিসে ঢোকার কয়েক মুহূর্ত আগে গলায় বা কোমরে ঝুলিয়ে নেয়। বাসে ট্রামে বা রাস্তা ঘাটে এনারা কবজ পরেন না, কারণ এনারা নিজের কোম্পানি নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগেন।

সব শেষে আসে ছোট কোম্পানির কর্মীচারী। ছোট কোম্পানি নিজের কর্মচারীর টাকায় ID কার্ড বানিয়ে দেয়। কোন এক মাস মাইনা থেকে কিছু টাকা কাটা হয়। এবার এই ID কার্ড না করার জন্য একটি ছোটখাটো আন্দোলন হয়ে যায় সেই মাসে। সকলেই কিন্তু ID কার্ডের বিরোধী নয়, বিরোধিতা করে ওই টাকা কাটা নিয়ে। ধরুন শেষমেশ কবজ হয়েও গেল, কিন্তু এরা সেটা কিছুতেই পরবে না। যেমন নতুন কবজ প্লাস্টিকে প্যাকেট করে দেওয়া হয়, ঠিক টেমনি আপিসের কালো রঙের হাত ব্যাগের কোনো এক চেনে থেকে যায়। বছরে দুই বা একবার এই প্লাস্টিকের মোড়ক ছেড়ে বেরিয়ে আসে, আবার কাজ মিটকে যথাস্থানে।